থ্যালাসেমিয়া একটি অটোজোমাল মিউট্যান্ট প্রচ্ছন্ন জিনঘটিত বংশগত রক্তের রোগ। থ্যালাসেমিয়া ধারণকারী মানুষ সাধারণত রক্তে অক্সিজেনস্বল্পতা বা "অ্যানিমিয়া"তে ভুগে থাকেন। ১৯৯৪ সালে থ্যালাসেমিয়া নিয়ে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে ৮ মে বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস ঘোষণা করা হলেও শতভাগ প্রতিরোধযোগ্য রোগটি বাংলাদেশে অপরিচিত এবং অবহেলিতই রয়ে গেছে। ২০১৭ সালে নন-প্রফিট চ্যারিটেবল সংস্থা, বায়োমেডিকেল রিসার্চ ফাউণ্ডেশন (বিআরএফ) ও বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউণ্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে দেশে এ রোগের সার্বিক অবস্থা নিয়ে আন্তর্জাতিক স্বনামধন্য জার্নালে (আরফানেট জার্নাল অব রেয়ার ডিজিজেস) প্রথম একটি কম্প্রিহেনসিভ আর্টিকেল প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশের ১০-১২ শতাংশ মানুষ এ রোগের বাহক। অর্থাৎ প্রায় দেড় থেকে দুই কোটি মানুষ থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক এবং কমপক্ষে প্রায় ৬০-৭০ হাজার থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশু-কিশোর রয়েছে। এখনো অনেক মানুষ আছে যারা থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক হওয়া সত্ত্বেও তাদের বেশিরভাগই এ রোগের নাম শোনেনি। দুজন থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে তাদের সন্তানের রোগটি দেখা দিতে পারে। তাই নিজে বাহক কিনা, তা জানতে হিমোগ্লাবিন ইলেকট্রোফরেসিস টেস্ট করে নিতে হবে। থ্যালাসেমিয়ার চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধই সর্বোত্তম। থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে, দীর্ঘমেয়াদী সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে নবম ও দশম শ্রেণির সব বিভাগের পাঠ্যসূচিতে থ্যালাসেমিয়ার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে অন্তর্ভুক্ত করা দরকার। যথাযথ সচেতনতা ছাড়া থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধ কর্মসূচি কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জনে ব্যর্থ হবে।
- মোছাঃ সাদিয়া আক্তার
শিক্ষার্থী, সান্তাহার হার্ভে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, বগুড়া
(মতামত পাতায় প্রকাশিত লেখার জন্য সম্পাদক দায়ী থাকবে না। আপনার লেখা পাঠাতে ইমেইল করুন naogaonyouth@gmail.com)
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন